Uncategorized

পটোয়া বা কুমোর- লোকে তাদেরও শিল্পী বলে

পটোয়া বা কুমোর- লোকে তাদেরও শিল্পী বলে। কিন্তু পটোয়া বা কুমোর – যারা মূর্তীর কারিগর তাদের কাজ জলেই বিসর্জন হয়।

‘আমি বাপু একটাই ছবি বানাব, আর সারা নাম কামাব। আমাকে নিয়েই তুমি করবে চর্চা’- অ্যালবার্ট অশোক

ছবি ভাস্কর্য নিয়ে আপনার কি ধারণা?বাংলাতে এবং বাংলাদেশে বাংলাভাষী ধরুন ১০+১৫= ২৫কোটি বাংগালী। সবাই ছবি ভাস্কর্য নাটক গান নাচ, সাহিত্য ইত্যাদি করেনা। কিন্তু তামাসা দেখার লোক একটা অংশ আছে যাদের আমরা বলি দর্শক বা শ্রোতা।


আমি যদি মোটামুটি অংকের হিসাবে আসি, ও দেখতে চাই শিল্পী কতজন শিল্পানুরাগী কতজন ও সাধারণ যাদের সারাদিনে সাংস্কৃতিক জগতের পরিবেশ বা আবহাওয়াতে থাকেননা। ধরুন, ২৫ কোটি = ১০০ জন লোকের মধ্যে গান, নাচ, নাটক, সিনেমা ছবি ও ভাস্কর্য ইত্যাদির সুযোগ ঘটেনা, বা উপেক্ষা করে চলেন গ্রামে গঞ্জে ও নিম্নতম বিত্তের শ্রমিক, চাষা ও স্বাধীন পেশার অশিক্ষিত ও নিরক্ষর হলেন ৭৫ জন। আর ২৫ জনের সাথে বিত্তের ও বিলাসের কিছু সময় আছে, তারা সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে যৌনতার সাথে জড়াতে চান। কিছু কবি – যারা নিজেকে কবি বলে যশপ্রার্থী বা শিল্পী। অভিনেতা, নাট্যকার, গায়ক, নর্তক ইত্যাদি যশপ্রার্থী তাদের যে সংখ্যা ধরুন শতকরা ৮০ জন বিপরীত লিংগের সাথে যৌনসম্ভোগের আশায় একটা মুখোশ পরে নানা জায়গায় কবিতাপাঠ, ছবির প্রদর্শনী। বা কিশোর কন্ঠী /লতা কন্ঠী বা বিশেষ কোন প্রতিষ্ঠিত গায়কের নকল করে গাইতে যান। এ করা পয়সা পাওয়া যায়না উলটো গাঁটের পয়সা খরচ হয়। কিন্তু পরোয়া নেই। একটা বিপরীত লিংগের সাথে যুক্ত হতে পারলে কারো অর্থকড়ি কারুর যৌনসুখ ঘটে।
তো যেই সংখ্যাটা বিত্ত ও বিলাসের সময় আছে সেই ২৫% লোকের মধ্যেসাংস্কৃতিক নানা বিভাগের লোক আছে। এবং সেখানে দর্শক ও শ্রোতা একটা বড় অংশ। আমি ধরলাম ১৫% শতাংশ তারা নিজেরা কোন অংশ নেয়না কিন্তু সমর্থন করে পৃষ্ঠপোষকতা করে। এইভাবে ধরা যায় ২৫ কোটির ১০% মানে ২.৫ কোটি লোক নানা সাংস্কৃতিক দিক নিয়ে চর্চা করেন। এদের মধ্যে কর্পোরেট হাউস যারা টিভিতে ও নানা মাধ্যমে গান সিনেমা, নাচ নিয়ে ব্যবসা করে তাদের ২টি দিক আছে। একটা হল লোকালয় থেকে যে জলসা প্রতি গ্রাম, জেলা শহরে প্রদর্শিত হত তা ঊঠে গেছে কারণ দর্শক নিজের বাড়ির বা ঘরে বসে টিভি বা নানা বৈদ্যুতিন যন্ত্র চালিয়ে অনেক চিত্তবিনোদনের গান নাচ ও সিনেমা দেখতে পান। এবং জেনে রাখুন মহিলাদের উলংগ হবার স্বাধীনতা তারাই দিয়েছে। টিভি ও সিনেমার প্রভাব বিপজ্জনক। ফলে গান নাচ ও নাটক নিয়ে আগে যে পাড়ায় পাড়ায় জলসা হত তা হয়না, কেউ গায়ক নায়ক নাচিয়ে বাড়িতে চর্চা করা ছেড়ে দিয়েছে সবাই চায় তার নাচ টিভিতে হোক।


যারা টিভিতে সেরা হয় তারা বেশ ভাল রোজগার করে ঠিকই কিন্তু তাদের ভবিষ্যতে যদি ভিক্ষা করে খেতে হয়, আমি অবাক হবনা। এরকম খুব নামী সেলেব্রিটিকে ইতিমধ্যেই দারিদ্রের নীচতম রেখায় দেখা গেছে। বাংলায় উত্তম কুমারের সাথে নায়িকার চরিত্র অভিনয় করেও ভিখারির মত দেখা গেছে অনেককে। মেয়েদের তবু যতদিন যৌবন আছে, শরীর বিক্রী করে খেতে পারে। যেমন নায়িকাদের সেক্স রেকেট মাঝে মধ্যে পুলিশ ধরে তুলে আনে। বয়েস ৩৫/৪০ এর পর তাদের শরীর বিক্রী করেও টাকা রোজগার বা খদ্দের পাওয়া অসম্ভব।


এই হল একটা অন্ধকার দিক।
টিভিতে ও সিনেমায় যদি যৌনমোড়কীকরণ বন্ধ করা যেত তাহলে পাড়ার জলসাগুলি এতটা ধাক্কা খেতনা। কিন্তু অনেক আকাট (WOKE) মনে করেন মেয়েদের স্বাধীনতা প্রকাশ্যে যোনী প্রদর্শনও ঠিক আছে। এইভাবে আমাদের মূল্যবোধ স্বাধীনতার মাধ্যমে হারিয়ে যাচ্ছে।
এবার চলুন আদিম শিল্প ছবি ভাস্কর্য নিয়ে যারা কাজ করেন। তাদের দেখি।
বলা বাহুল্য বাংলাদেশে যে হারে হিন্দু নিপীড়ন চলছে, তা সভ্যতার নামে জঘন্য হিংস্রতা। বাংলাদেশ মুসলিম, ভারত ভাগ হয়ে জিন্নার দৌলতে মুসলিমরা ভেবেছিল তারা তাদের ধর্মকে একধাপ এগিয়ে নিয়ে গেছে। এই ভাবনাটা মুসলিমদের হীনমনস্কতা। শিক্ষার নিরিখে যে ধর্ম অশিক্ষিত বেশি , যারা নিজের শৃঙ্খল নিজে ভাংগতে পারেনা তাদের ৭৫ বছর পর ইদানীং দেখছেন কি হাল? তবু তারা বৈদ্যুতিক শক, ও নানা ধরণের বর্বরতার সাথে হিন্দু নিপীড়ন ও ধর্মান্তকরণ চালিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ মুক্তি যুদ্ধে যে ভাবে হিন্দু ঋণ খেয়েছে আমরা ভেবেছিলাম বাংলাদেশের মানুষ পশ্চিম পাকিস্থানের মতন নয়। কিন্তু পৃথিবীতে মুসলিমদের কিছু বলতে পারবেননা, তারা অ-মুসলিমদের গলার নালী কাটতে অভ্যস্থ। পৃথিবীতে যত আতংকবাদ ও বর্বর কান্ড ঘটেছে যারা ধরা পড়ে তারা ৯৯% মুসলিম। তবু আপনি মুসলিমদের প্রতি তর্জনী তুলতে পারবেননা। পাকিস্থানে মুসলিমরা মুসলিমদের অন্যান্য ভাগগুলিকে যেমন সুন্নী, শিয়া ও আহমদী ইত্যাদী নানা শাখা আছে। ওখানে সুন্নী সম্প্রদায় বড় তারা নিপীড়ন চালায় Hindus, Pakistani Ahmadis, Shia, Sufis and Christians উপর। এ এক সাংঘাতিক রাস্ট্র পাকিস্থান। https://www.uscirf.gov/sites/default/files/Pakistan%20Factsheet.pdf
বাংলাদেশেও সুন্নীরা সংখ্যায় বড়। ফলে পাকিস্থানের মতই সেখানকার প্রভাব। এই মুহুর্তে ১.৩ কোটির কম হিন্দু নেই, মুষ্টিমেয় বৌদ্ধ এবং খ্রিস্টানরা সেই দেশে বাস করে, জনসংখ্যার প্রায় 8 শতাংশ; দেশভাগের আগে, ১৯৪১ সালের আদমশুমারি অনুসারে তারা প্রায় 30 শতাংশ গঠন করেছিল। (তথাগত রায় 18 অক্টোবর, 2021) অর্থাৎ বাংলাদেশে অ-মুসলিম থাকার কথা ২ভাগ মুসলিম ১ ভাগ অন্যান্য অ-মুসলিম। বর্তমানে বাংলাদেশে ১৭ কোটি জনসংখ্যায় ১ কোটি ৩২ লক্ষ হিন্দু ও নিপীড়িত অবস্থায় আছেন।
(এখানে প্রতিটি তথ্য উইকিপিডিয়া, ও নানা বিশ্বস্ত তথ্যর থেকে নেওয়া, মনগড়া নয়, তবু যাচাই করে নিতে পারেন।)
ধর্মীয়ভাবে ইসলাম শিল্প সাহিত্যর প্রতি নানা নিষেধাজ্ঞা করে রেখেছে। ফলে সাংস্কৃতিক চর্চা তারাই করে যারা সুবিধাবাদী এবং নিজের স্বার্থের পর অন্যকে সমর্থন তারা দেবে এমন বিশ্বাস না করাই ভাল। তবু বাংলাদেশে ও পাকিস্থানে অনেক অবয়ব চিত্রী ও ভাস্কর তাদের দেশে বিখ্যাত। এই ধর্মীয় নিপীড়ন এবং সুন্নীসম্প্রদায় থেকে মাথা বাঁচিয়ে রাস্ট্র নিজেকে যতই বিশ্বের দরবারে দেখাকনা কেন মুসলিমদের প্রতি অবিশ্বাস অমুসলিমদের কখনোই মুছে যাবেনা।
ফিরে আসি ছবি ভাস্কর্যের কথায়। ২৫ কোটি বাংলাভাষীর হৃদয়, ও জীবনের উপলব্ধি এবং কাজের ধারা পুরো আলাদা। বাংলাদেশ তার বাংলাকে উর্দু শব্দ ও সংস্কৃতি মিশিয়ে চলছে আর পশ্চিমবংগের মানুষ ইংরেজদের পা-চাটা হয়ে চলছে। অর্থাৎ বাংলার উৎসভূমি ও প্রাচীন সংস্কৃতির যে মূল্য ছিল তা ধরে রাখার দায় কোন বাংলার নেই।
আমি তবু ধরে নিলাম বাংলাদেশে ২৫ লক্ষ মানুষ বিভিন্ন আর্ট স্কুল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করেন এবং স্বশিক্ষিত বা কোন প্রতিষ্টিত শিল্পীর তত্ত্বাবধানে শিল্প ভাস্কর্যের চর্চা করেন। বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয় ও আর্ট কলেজ অনেক বেশি। একটা তালিকায় দেখছিলাম প্রায় ৩০ এর কাছাকাছি। পশ্চিমবংগে গোনা যায়। গভর্ন্মেন্ট আর্ট কলেজ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে, ইন্ডিয়ান আর্ট কলে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ব বিদ্যালয়ের অধীনে। আর বিশ্বভারতী শান্তিনিকেতন। খয়রাগড়(ছত্তিসগড়) এর অধীনে ডিগ্রী কলেজ ভিস্যুয়াল কলেজ অফ ক্যালকাটা, গড়িয়াতে আছে এছাড়া ব্যক্তিগত কিছু ডিপ্লোমা কলেজ আছে।
বাংলাদেশের চর্চার তুলনায় পশ্চিমবংগে একেবারেই দীন তবু স্বশিক্ষিত বলে অনেকে মানুষকে চিত্তাকর্ষণ করতে চান। এছাড়া গত ১০০ বছরে পশ্চিমবংগের শিল্পীদের একটা প্রভাব আছে। তবু ধরে নিলাম ১০ লক্ষ মানুষ ছোট বড় চিত্র-ভাস্কর্য নিয়ে কাজ করতে চান।

এপার বাংলা ওপার বাংলা মিলিয়ে যদি আমি ধরি ২৫+১০=৩৫ লক্ষ লোক চিত্র ভাস্কর্য চর্চা করেন তাহলে তো ছবির ও ভাস্কর্যের একটা সুন্দর বাজার ও প্রচার হওয়ার কথা। এবং আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলার নাম থাকার কথা। কিন্তু বাস্তবে আন্তর্জাতিক সীমানা থাক দূরে নিজেদের ঘরের সীমানাই বাংগালি ভাংগতে অক্ষম।
বাংলাতে ক’জন ছবি ভাস্কর্য সম্পর্কে উচ্চ আশা পোষণ করেন? কয়জন ছবি ভাস্কর্য কিনে শিল্পীর সহযোগিতা করেন?
না এগুলি নেই। কারণ আমাদের আর্ট স্কুল ও কলেজগুলি মান্ধাতার আমলের পঠন পাঠন ও ছাত্রদের সৃজনশীলতা বাড়াবার জন্য সমসাময়িক শিল্প নিয়ে লেকচার, ওয়ার্কশপ, বা অন্য কোন আগ্রহ প্রকাশ করেনা। প্রমোশন বা জনপ্রিয়তা বলে একটা কথা আছে। একটা বস্তুকে বিক্রয়যোগ্য করার জন্য উৎপাদন কারীকে নিজের দায়ে জনপ্রিয়তা লাভের কাজ কর্ম করতে হয়। এগুলি বাংলাতে নেই। যেটুকু বাংলাদেশে বিন্দুমাত্র আছে তা পশ্চিমবংগে নেই। এবং শিল্পীদের( ৩৫লক্ষ) ৯০ শতাংশ উদাসীন ও তারা কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় পেরিয়ে এসেও তাদের কোন বিকাশ হয়নি। তাদের একটা বড় অংশ পড়াশুনা করে চাকরির জন্য। ফলে পরীক্ষায় নাম্বার ও সার্টিফিকেটেই সীমিত তাদের প্রতিভা।

সমাজে আর কিছু আছেন যাদের জীবিকা ছবি আঁকা ও (ভাস্কর্য নয়) মাটি গড়া। তারা হলেন পটুয়া আর কুমোর। পটোয়া আর কুমোররা পড়াশুনার একেবারেই ধার ধারেননা। তারা যন্ত্রের মত ছবি ও মূর্তী উৎপাদন করেন আর বিক্রী করেন একই ছাঁচের সব কখনো একটু আধটু ঘুরিয়ে ফিরিয়ে অদল বদল করে। তারাও শিল্পী যশো প্রার্থী।

আর একটা বড় অংশ, হয়ত বড় বড় অফিসের ইগজিকিউটিভ। একটু কবি শিল্পী যশ পাবার জন্য বন্ধুবান্ধবী তৈরির জন্য কিছুদিন সাংস্কৃতিক মাধ্যমগুলি নিয়ে চর্চা করেন। সখ মিটে গেলে ছেড়ে দেন।
শিল্পী কবিদের উত্থানের যে কয়েকটা ধারা আছে- যেমন কলেজ থেকে পাশ করে শিল্পীরা নানা সংগঠনের বার্ষিক প্রদর্শনীতে যোগ দেয়। সেখানে নির্বাচিত হয়, এবং নানা স্থানে একটা নির্বাচনের প্রক্রিয়ায় তারা উঠে, বা কবিরা ছোট ছোট পত্রিকাতে দীর্ঘদিন কবিতা পাঠিয়ে সম্পাদকের নির্বাচনে নিজের মেধার পরীক্ষা দিয়ে কবি হন এই যশো প্রার্থী বড় বড় মাইনের অফিসারররা কিন্তু তেমন নির্বাচিত নন, তারা হঠাৎ তাদের গাঁটের টাকা দিয়ে বই প্রকাশ করল বা কোন একটা প্রদর্শনী করল। তারা রাতারাতি অন্যকে টেক্কা দিয়ে টাকার জোরে মহারাজ হতে চান।
তো এসব বাদ দিয়ে দেখা যাবে ৩৫ লক্ষের মধ্যে সাড়ে ৩ হাজার সৎ শিল্পী আছেন যারা পড়াশুনা করেন নিজের প্রতিভাকে ক্ষুরধার করার আপ্রাণ চর্চা করেন এবং জিতে যান।

Uncategorized

সন্দীপ দত্ত। আমার স্মরণে

সন্দীপ দত্ত, একজন কবি, প্রাবন্ধিক এবং গ্রন্থাগারিক, যিনি গত চল্লিশ বছরে পশ্চিমবঙ্গে লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলনের সমার্থক হয়ে উঠেছিলেন, ১৫ মার্চ ২০২৩-এ মারা যান।

বহু বছর আগেকার তোলা, ছবিতে অ্যালবার্ট অশোক ও সন্দীপ দত্ত

সন্দীপ দত্ত এককভাবে লিটল ম্যাগাজিনগুলির জন্য একটি লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন যা প্রতিষ্ঠার পর থেকেই বাংলা সাহিত্যের (অধিকাংশ লিটল ম্যাগাজিনে লেখা) গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু তেমন সুপরিচিত লেখকদের নিয়ে কাজ করা গবেষকদের জন্য অন্যতম প্রধান সম্পদ।

লিটল ম্যাগাজিনে এমন সব গম্ভীর ভাবনা, এমন অচেনা ব্যক্তিত্বের লেখা থাকে, যা না গবেষণার সুযোগ পেলে তা হারিয়ে যায়। লিটল ম্যাগাজিন তুচ্ছ তাচ্ছিল্য পায় বলেই অনেক স্বাধীন বক্তব্য পেশ করা যায়।
ব্যবসায়িক প্ত্রিকা, আর্থিক লেনদেন নিয়ে থাকে, সেখানে অনেক দায়িত্ব বেশি, কিছু আইনের গন্ডী থাকে। সেই তুলনায় অতি অল্প সংখ্যক প্রকাশিত সংস্ক্রণ নিয়ে ক্ষুদ্র পত্রিকা আত্মপ্রকাশ করে। এবং হারিয়ে যায়। এই হারাণো থেকে বাঁচিয়ে রাখা ক্ষুদ্র ও তুচ্ছ পত্রিকাকে সন্দীপ দত্তের পাঠাগার ও গবেষণা কেন্দ্র অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

আমরা যারা কোনদিন আনন্দবাজারের লবিতে তেল মারার সুযোগ আসেনি, আসলে কেউ বিখ্যাত হতে চায় বলেই বিখ্যাত মানুষদের ছায়া হয়ে, গোলামী করে করুণার পাত্র হয়ে ওখানে চাকরি করতে যায়। আনন্দবাজারে তো লক্ষ লক্ষ কবি প্রাবন্ধিক উপন্যাসিক ছেপেছে। বলুনতো কয়জনকে আপনি মনে করতে পারেন? বিখ্যাত হওয়া হল যেকোন লোককে বহুল প্রচারিত মাধ্যমে তার লেখা(ট্র্যাশ বা মেরিটের) বার বার ছাপা হলে প্রচার বাড়ে আমরা সাধারণলোকেরা বলি বিখ্যাত। যদি সত্যিই আনন্দবাজার রাজা বানানেওয়ালা হতো তা হলে বাংলা থেকে অনেক আন্তর্জাতিক লেখক আমরা পেতাম। বাংলা তো বন্ধ্যা ভূমি। বরং এই ক্ষুদ্র পত্রিকায় যে ব্যক্তি তার মনের কথাটা বলতে পেরেছেন তা যদি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে থাকে, লিটল ম্যাগাজিনের পাঠাগার থেকেও তার হাত আকাশ ছুঁতে পারে।
(আনন্দবাজার নামটা আমি উল্লেখ করলাম, এটা একটা ্সাহিত্য-সাংস্কৃতিক ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটির প্রাচীনতম ও জনপ্রিয়তা এত তুংগে যে বাংগলার শিল্প সাহিত্যের সংস্কৃতি ও খবরের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সাথে সমার্থক শব্দ হয়ে গেছে। প্রতিষ্ঠানটির একক দায়বদ্ধতা ও কোনরূপ অযাচিত বিতর্ক আনতে চাইনা। এখানে আনন্দবাজার মানে বাংলার সকল প্ত্রপত্রিকা যারা ব্যবসা করে ও বাঘ বানিয়ে মানুষকে চিত্তবিনোদন করে বুঝতে হবে।)

আমি কলেজস্ট্রীট পাড়ায় প্রকাশন বিভাগে গোটা ৫০ এর অধিক প্রকাশনের সাথে কাজ করেছি, ১৯৮২ সাল থেকে ২০০৪ অব্দি। অনেক প্রকাশককে প্রকাশনা বাতি নিবিয়ে দোকান বিক্রী করতে দেখেছি। দেখেছি আস্তে আস্তে প্রকাশকদের শিল্পী লেখক মূদ্রক বাইন্ডার এদের ঠকিয়ে ব্যবসা চালাতে গিয়ে পরিণতি হিসাবে নিজেরাই ঝাপ বন্ধ করে চলে গেছেন। শুনেছি বাংলাদেশের ঢাকা নাকি আরো ভয়ঙ্কর জায়গা।
আমার অনেক স্ক্রিপ্ট/ ড্রয়িং কাজ অনেকে নিয়ে ছাপবে বলে আর ফেরত দেয়নি। হারিয়ে গেছে সেই সব পরিশ্রম। আবার অনেক বড় ব্যবসায়ী কাজ করিয়ে নিজের ইচ্ছামতো সে কাজের পয়সাও দেয়নি, কাজও ছাপেনি। আজকে কলেজস্ট্রীটের অনেক প্রকাশক কবিতা গল্প উপন্যাস ইত্যাদি নিজের পয়সায় ছাপেনা। ছাপলেও বিক্রী করতে পারেনা। বই প্রমোট করার দায় এসে পড়ে লেখকের ঘাড়ে। আমাদের *ষষ্টি দা, নিজের বই নিজেই কি করে বিক্রী করতেন অবাক হতাম। তখনও তিনি জনপ্রিয় লেখক হননি। বই তখন ইংরেজি থ্রিলার/ডিটেক্টিভ ইত্যাদি গোছের অনুবাদ সাহিত্য বেরোলে লেখক ২৮ কপি পেতেন এবং সেগুলি বিক্রী করে নিজের আর্থিক লাভ বুঝে নিতেন। ছাপা হতো ১১০০ কপি।

*ষষ্টিপদ চট্টোপাধ্যায়, পান্ডব গোয়েন্দার লেখক


এখন তো ছাপাই কমে গেছে কবিতা বই লেখক ছাপে ৫০/১০০ কপি এবং বিনা পয়সায় বন্ধুদের বিতরণ করতে হয়, বন্ধুরা অতিউষ্ণতা দেখিয়ে নিয়ে যান বাড়ি গিয়ে নোংরার ঝুড়িতে ফেলে দেন। জিজ্ঞেস করলে বলেন আরে বইটা পড়তে পারলামনা একজন কেড়ে নিয়ে নিল সে ফেরত দিলে পড়ে জানাব।
এসবের চেয়ে ক্ষুদ্র পত্রিকায় আপনার ক্ষুদ্রতম লেখাটাও যদি সম্পাদকের তেল মর্দন করে ছাপাতে পারেন তবু লেখক অনেক সম্মানীয়। আর তার গাঁটের পয়সা বেঁচে যায়। ক্ষুদ্র পত্রিকায় দীর্ঘদিন লেখলে তার যে জনপ্রিয়তা হয় তা খাঁটি থাকে ফলে তার প্রতিষ্ঠা পাবার আশা গড়ে উঠে। আজকাল তো ছাইপাশ অনেকেই পকেটের টাকা দিয়ে ছেপে কোন মহিলার সংগ পেতে চান। তারা এটাও জানেন যে তারা কোনদিন লেখক হবেননা ঐ মহিলার সংগটুকু ওই কবিযশে যদি ইম্প্রেশড্‌ হয়ে পান।

সাহিত্যের সেদিন আর নেই।শিল্প সংস্কৃতি একগুচ্ছে বদমায়েসের জন্য শ্রদ্ধাভক্তি উঠে গেছে। কিছু তরুণ তরুণী এখনো ক্ষুদ্রপত্রিকা পড়েন ও তা নিয়ে ভাবেন, এটাই ইতিবাচক।

সময়ানুগ বলে একটা ক্ষুদ্রপত্রিকা পরলোকগত আমাদের প্রিয় দেবু দা (দেবকুমার বসু) দর্শক পত্রিকার সম্পাদক, চালাতেন। ওতে আমার একটা কবিতা প্রকাশের সূত্রে আমি টেমার লেনের গলিতে ঢুকি। এবং সেখানথেকেই সন্দীপদা’র সাথে পরিচয়। গুরুজন হিসাবে তার সান্নিধ্য পাবার ইচ্ছা জাগত। পার্কস্ট্রিট/ময়দানের বইমেলাতে প্রতি বছর দেশবন্ধু পার্ক থেকে দেবু দার নেতৃত্বে বহু কবি ও গুণিজন মিছিল করে বইমেলায় সকাল/দুপুরে যেতাম আর বিনা পয়সায় ১ ঘন্টার জন্য বইমেলা কর্তৃপক্ষা ইউ বি আই মঞ্চ কবিতা পাঠের জন্য দিতেন। বহু বছর আমি ও আমরা সেখানে কবিতা পাঠ করেছি , দেখতাম সন্দীপ দা সেখানে মাথায় প্ল্যাকার্ডের টুপি বানিয়ে হাঁছেন তার গ্র্নথাগারের প্রচার করছেন।

একটা ক্ষয়িষ্ণু সমাজে আমরা বর্তমান এসে পড়েছি। এর জন্য পূস্তক প্রকাশনার গিল্ড থেকে অনেকেই দায়ী রাজনীতি ও রাজ্য সরকার তো বটেই।

সন্দীপ দা কে নিয়ে আমার স্মৃতিকথা লেখার ইচ্ছা ছিল আজ দেখলাম ফেবু মনে করিয়ে দিল।

Uncategorized

মালালা ইউসুফজাই

Malala Yousafzai Pakistani education activist
আপনার কি মনে হয় এই মহিলাটি নোবেল শান্তি পুরস্কার ্পাওয়ার যোগ্য?
১৯৯৭ এ জন্ম। ২০১৪ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার পেয়েছে।Nobel Peace Prize laureate মালালা সুন্নী মুসলমান সম্প্রদায়ের।পাস্তুন উপজাতি। ওদের পরিবারে দারিদ্রতা এতই ছিল যে মালালা হাসপাতালে জন্মায়নি বাড়িতে প্রতিবেশির পরিষেবা নিয়ে জন্মেছে সেই কারণে তার বাবা নাম রাখে মালালা মানে দুঃখ আক্রান্ত grief-stricken”
মালালার বাবা একজন শিক্ষক ছিলেন। ঘটনা ক্রমে বিবিসির একজন সাংবাদিক তালিবানদের খবর নেওয়ার জন্য যোগাযোগ হয় ও বিবিসির উর্দু ভাষায় ছদ্মনামে ব্লগ লিখতে দেওয়া হয়। তালিবানরা সোয়াত প্রদেশে মেয়েদের পড়া বন্ধ করে দিয়েছিল সেই প্রেক্ষিতে তাদের মেয়েদের প্রতিক্রিয়া। একট বড় বাচ্চা মেয়ে অফারটা নিয়েও তালিবানের ভয়ে ছেড়ে দিল, তখন গুল মাকাই “Gul Makai” (“cornflower পাস্তু লোক কথার একটি মেয়ের নাম , মালালা লিখল। চার পাঁচটি লাইন। ২০০৯ এর ৩রা জানুয়ারিতে বিবিসি ১২ বছরে মালালার ছদ্মনামে (গুল মাকাই) গল্প উর্দু ব্লগে প্রকাশ করল।
লেখাটা ছিল এরকম
আমি গতকাল সামরিক হেলিকপ্টার এবং তালেবানদের সাথে একটি ভয়ানক স্বপ্ন দেখেছিলাম। সোয়াতে সামরিক অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে আমি এমন স্বপ্ন দেখেছি। আমার মা আমাকে সকালের নাস্তা বানিয়ে দিলেন এবং আমি স্কুলে চলে গেলাম। আমি স্কুলে যেতে ভয় পেতাম কারণ তালেবান একটি আদেশ জারি করেছিল যে সমস্ত মেয়েদের স্কুলে যাওয়া নিষিদ্ধ করে। পাকিস্তানি তালেবানের আদেশের কারণে সংখ্যা কমে যাওয়ায় ২৭ জন ছাত্রের মধ্যে মাত্র ১১ জনই ক্লাসে যোগ দিয়েছিল। এই আদেশের পর আমার তিন বন্ধু তাদের পরিবারের সাথে পেশোয়ার, লাহোর এবং রাওয়ালপিন্ডিতে চলে গেছে।
তো পশ্চিমী রাস্ট্রগুলি যেমন লন্ডনে মুসলিমরা বর্তমানে যা করছে, খোলা আকাশের নীচে হিন্দু মন্দির ভেংগে দিচ্ছে রক্তারক্তি করছে, প্রশাসন ভয় পাচ্ছে সামলাতে। কিন্তু ওরা এশিয়ায় ব্যবসার লোভে মুসলিমদের উপর চাপ রাখছে।পশ্চিমীরা বলছে তারাই সভ্য জাতি। ম্যাডোনার বা মিলি সাইরাসের যোনি খুলে বসা হল সভ্যতার দৃস্টান্ত আর মহিলারা বুর্খা পরে বেরোনো বা পড়াশুনা না করা হল অসভ্যতা। পশ্চিমীরা কিন্তু চীনকে ভয় পায় যমের মতন। ওরা মুসলিমদের সাথে বা মধ্যপ্রাচ্যে রাজত্ব করার জন্য নানা অছিলা তৈরি করেছে ও বাচ্চা মেয়েদের দিয়ে ভিক্টিম কার্ড খেলাচ্ছে।
পাকিস্থান কিন্তু বর্তমানে দেউলিয়া। কারণ ভন্ডামী মিলিটারি বনাম ভোট জয়ী গণতন্ত্রের বিশাল শত্রুতা। ওদের প্রধানমন্ত্রীরা পশ্চিমী টাকা খেয়ে পুতুল হয়ে থাকে। মিডিয়াগুলিও তেমন দোষে দুষ্ট।
মিডিয়াগুলি গুল মাকাইর আসল নাম জেনে নানা প্রেস ও পুরস্কার দিতে লাগল ও মালাল্কে নাবালিকা গ্রুপের শ্রেষ্ঠ সেলিব্রিটি বানিয়ে দিল। মালালার সাহস বেড়েছে আর কেনই বা বাড়বেনা। তার নাম খবরে বেরুচ্ছে। প্রধান মন্ত্রী পুরস্কার দিচ্ছে। সে একজন বিখ্যাত। এদিকে তার বাবাও বিখ্যাত মেয়েকে সাহসী বানিয়ে তুলছে ও মেয়েকে সামনে রেখে অর্থ উপার্জন করছে। মালালার বাবা জিয়াউদ্দীন Ziauddin Yousafzai ও হিরো।
মালালার ইচ্ছা ছিল একজন ডাক্তার হবে। আর তার বাবা চেয়েছিল রাজনীতিক হবে।
এদিকে তালেবানরা ২০১২ তে তাদের রেডিওতে মালালা ও তার বাবাকে খুনের হূমকী দিল। ৯ অক্টোবর বাসে করে বাড়ি ফেরার সময় আরো দুটি মেয়ের সাথে এক নন্দুকবাজ গুলি করে পালিয়ে যায়। মালার বাঁ চোখের উপর দিয়ে বিদ্ধ হয় ও গুরুতর জখম হয়ে হাসপাতাল ও লন্ডন।
এর আগের বছর ডেসমন্ড টুটু আফ্রিকার ( Archbishop Desmond Tutu, a South African activist, nominated Yousafzai for the International Children’s Peace Prize of the Dutch international children’s advocacy group, ) সুপারিশ করল মালালাকে শান্তি পুরস্কার দেবার জন্য।
এরপর ২০১৪ সালে মালালাকে শান্তি পুরস্কার দেওয়া হল।
এই পুরো গল্পটাতে পশ্চিমী মিডিয়া ও পাকিস্থানের সুযোগসন্ধানীরা একটি নাবালিকা মেয়েকে বার বার দেখিয়ে বিখ্যাত করে দিল ও মেয়েটির ভবিষ্যত সুরক্ষার জন্য তাকে শান্তির পুরস্কারের অর্থ দেওয়া হল
এটা একটা বিরাট প্রপাগান্ডা এইভাবেই বড় পুরস্কার দেওয়া হয়।

রাজনীতি

৭৫ বছর ধরে গঙ্গার জল কোথায় শুকিয়েছে

সাধারণ মানুষের একটা স্তর আছে, আর অসাধারণ মানুষের অন্যরকম স্তর।

সাধারণ মানুষ আমি তাদেরই ধরি যারা সাধারণ বুদ্ধি ও ভাবনা নিয়ে চলে এবং নিজের স্বার্থ ছাড়া অন্য কিছু বুঝতে চায়না। কিন্তু সমাজ পরিবর্তন হলে তারা উপভোক্তা হয়। অসাধারণ মানুষ তারাই, যারা সামাজিক পরিবর্তন আনে, কারণ মানুষ চায় অধিকতর উন্নত জীবন। আর তাদের কাজের জন্যই সমাজে সকল রকমের পরিবর্তন আসে। আমাদের সমাজে যে রোগগুলি আছে তা অনেকে মনেই করেনা কারণ তারা সমাজের কোন খোঁজ খবর রাখেনা। আন্দাজে, আবেগে, মন গড়া ভাবনায় থাকে ও অপরের উপর প্রচার করে। রোগ এই ভুলতথ্যেও অনেক দাঁড়িয়ে যায়।

সামাজিক প্রথমিক দাবি হল স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কর্মসংস্থান, নিরপেক্ষ বিচার ও আশ্রয় বা বাসস্থান সকলের জন্য। যেহেতু সমাজে এই দাবিগুলির বন্টন ব্যবস্থা রাস্ট্রের ও রাস্ট্র মানে তথাকথিত রাজনৈতিক নেতাদের উপর ও মন্ত্রকের সেই হেতু ক্ষমতা সেখানে কেন্দ্রীভূত। ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত হলে মানুষ দানবে পরিণত হয় এবং ক্ষমতার অপব্যবহার ঘটে। সমাজের সামাজিক নিয়মগুলি ভেংগে পড়ে। মানুষ তখন ক্ষমতার ছায়ায় গিয়ে নিজের স্বার্থকেন্দ্রিক হয়ে অন্যের উপর অবিচারগুলি করতে থাকে।

এরকম সময়ে মানুষ বিশৃঙ্খলা বাড়ায়। ভারতবর্ষ গণতান্ত্রিক দেশ বলে প্রচার করে।

ভারত কেমন দেশ?

ভারত ১৯৪৭ এর পর নিজের পরিচিতি এভাবে দেয়,

“সংসদীয় সরকার ব্যবস্থা সহ সার্বভৌম সমাজতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র। ২৮টি রাজ্য এবং ৮টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল।(Sovereign Socialist Secular Democratic Republic with a Parliamentary system of Government. 28 States and 8 Union Territories.)”

এই গালভরা কথাগুলির বাস্তবে কোন অস্তিত্ব নেই।

আপনি ভাবুন, একটা লাইনে আপনি কি করে বলেন সমাজতান্ত্রিক-গণতান্ত্রিক-প্রজাতান্ত্রিক? না ভাল ভাল কথাগুলি সাজিয়ে মানুষকে বোকা বানানো যায়?যারা নেতাগোছের তারা কি আফিমে ডুবে?

প্রশ্ন করুন সমাজতান্ত্রিক-গণতান্ত্রিক-প্রজাতান্ত্রিক এই ৩ টে শব্দের সংজ্ঞার ১টি উত্তর পরিস্কার কি হতে পারে? ভারতে তো এই ৩টে শব্দের একটাও নেই।

সোস্যালিজমঃ (অর্থনীতি)

একটি অর্থনৈতিক তত্ত্ব বা ব্যবস্থা যেখানে উৎপাদন, বন্টন এবং বিনিময়ের উপায়গুলি সম্মিলিতভাবে সম্প্রদায়ের মালিকানাধীন, সাধারণত রাষ্ট্রের মাধ্যমে। লাভের পরিবর্তে,উত্পাদন দ্বারা এটি ব্যবহারের জন্য চিহ্নিত করা হয়। প্রতিযোগিতামূলক অর্থনৈতিক কার্যকলাপের অনুপস্থিতি দ্বারা,ব্যক্তিগত সম্পদের সমতা দ্বারা, এবং, সাধারণত, বিনিয়োগ, দাম এবং উৎপাদনের মাত্রা সরকার নির্ধারণ করে।

(লেনিনবাদী তত্ত্বে) পুঁজিবাদ থেকে সাম্যবাদে একটি সমাজের বিকাশে সর্বহারা বিপ্লবের পরে একটি ক্রান্তিকাল transitional stage:

প্রয়োজনের পরিবর্তে কাজের ভিত্তিতে আয়ের বন্টন দ্বারা চিহ্নিত।

রিপাব্লিক

প্রজাতন্ত্র [Lat. res publica,=পাবলিক অ্যাফেয়ার], আজকে বোঝা যায় একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র যা একটি ব্যাপকভাবে অন্তর্ভুক্ত ভোটারদের প্রতিনিধিদের দ্বারা শাসিত। প্রজাতন্ত্র শব্দটি পূর্বে এমন একটি সরকারকে নির্দেশ করত যা বংশগত বা রাজতান্ত্রিক শাসন উভয়ই থেকে মুক্ত ছিল free from hereditary or monarchical rule এবং রাষ্ট্রের জনপ্রিয় নিয়ন্ত্রণ এবং জনকল্যাণের ধারণা ছিল। এই অর্থেই আমরা প্রাচীন রোমান প্রজাতন্ত্রের ancient Roman republic কথা বলি। আজ, উপরোক্ত বৈশিষ্ট্যগুলি ছাড়াও, একটি প্রজাতন্ত্র হল এমন একটি রাষ্ট্র যেখানে সমাজের সকল অংশের all segments of society are enfranchised অধিকার রয়েছে এবং যেখানে রাষ্ট্রের ক্ষমতা সাংবিধানিকভাবে সীমিত।

ঐতিহ্যগতভাবে একটি প্রজাতন্ত্রকে সত্যিকারের গণতন্ত্র থেকে আলাদা করা হয় যে প্রজাতন্ত্র নাগরিকদের দ্বারা নির্বাচিত প্রতিনিধি পরিষদের মাধ্যমে কাজ করে, যখন গণতন্ত্রে জনগণ সরাসরি সরকারী বিষয়ে অংশগ্রহণ করে।

বাস্তবিক অনুশীলনে, তবে, বেশিরভাগ আধুনিক প্রতিনিধিত্বশীল সরকার গণতন্ত্রের চেয়ে প্রজাতন্ত্রের কাছাকাছি।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি ফেডারেল প্রজাতন্ত্রের উদাহরণ, যেখানে কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষমতা সীমিত এবং জাতির উপাদান অংশ, রাজ্যগুলি, কিছু পরিমাপে গৃহের শাসন ব্যবহার করে the component parts of the nation, the states, exercise some measure of home rule। ফ্রান্স একটি কেন্দ্রীভূত প্রজাতন্ত্রের উদাহরণ, যেখানে উপাদান অংশগুলির আরও সীমিত ক্ষমতা রয়েছে।

প্রজাতন্ত্র হল একটি রাজনৈতিক ব্যবস্থা, যার রাষ্ট্র প্রধান একজন রাজা নন এবং আধুনিক সময়ে সাধারণত একজন রাষ্ট্রপতি।

যেখানে সর্বোচ্চ ক্ষমতা নাগরিকদের একটি সংস্থার মধ্যে রয়েছে যারা তাদের কাছে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং প্রতিনিধিদের ভোট দেওয়ার অধিকারী। যেখানে বংশগত পদে থাকার পরিবর্তে রাষ্ট্রের প্রধান নির্বাচিত হয়। যেখানে কোন রাজা বা রাণী নেই, সরকারের ক্ষমতা, আইন প্রণয়ন ইত্যাদি এক বা একাধিক নির্বাচিত প্রতিনিধিকে দেওয়া হচ্ছে (যেমন রাষ্ট্রপতি, সংসদ সদস্য ইত্যাদি)। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি প্রজাতন্ত্র –

সেই ধরনের সরকার যেখানে সমস্ত নাগরিকের জন্য প্রশাসনিক ব্যবস্থা উন্মুক্ত। একটি রাজনৈতিক ইউনিট বা “রাষ্ট্র”, তার সরকার গঠন থেকে স্বাধীন।That form of government in which the administration of affairs is open to all the citizens. A political unit or “state,” independent of its form of government. অন্য অর্থে, এটি রাষ্ট্রকে বোঝায়, স্বাধীনভাবে তার সরকার গঠন।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে প্রজাতন্ত্রের সরকার একটি ধ্রুবক constant রয়ে গেছে। আইনসভা, নির্বাহী এবং বিচার বিভাগীয় legislative, executive, and judicial শাখার মধ্যে ক্ষমতা ভাগ করার ক্ষেত্রে রাজ্য সংবিধান ফেডারেল সংবিধান অনুসরণ করে।

একইভাবে, রাজ্যগুলি কার্যনির্বাহী executive ভেটো ক্ষমতা এবং বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনা সহ তিনটি শাখার মধ্যে বিদ্যমান বিভিন্ন যাচাই এবং ভারসাম্যতা গ্রহণ করেছে। states have adopted the various checks and balances that exist between the three branches, including the executive Veto power and Judicial Review.

ভেটো [ল্যাট.,=veto [Lat.,=I forbid] নিষেধ করা], সরকারের একজন কর্মীর (যেমন, রাষ্ট্রপতি) ক্ষমতা, বা একটি গোষ্ঠী বা জোটের একজন সদস্যের, অন্য কর্মকর্তাদের দ্বারা পাস করা বা প্রদত্ত আইন বা চুক্তির কার্যক্রমকে ব্লক করার ক্ষমতা বা সদস্য।

মার্কিন সরকারে, সংবিধানের অনুচ্ছেদ I, অনুচ্ছেদ 7 রাষ্ট্রপতিকে কংগ্রেস দ্বারা পাস করা যেকোনো বিল ভেটো করার ক্ষমতা দেয়।

রাষ্ট্রপতির ভেটো ক্ষমতা সীমিত; এটি সাংবিধানিক সংশোধনীর বিরোধিতা করার জন্য ব্যবহার নাও হতে পারে এবং এটি কংগ্রেসের উভয় কক্ষের দুই-তৃতীয়াংশ ভোট দ্বারা বাতিল হয়ে যেতে পারে। অনুশীলনে, রাষ্ট্রপতি খুব কমই ভেটো ব্যবহার করেন

গণতন্ত্র

গণতন্ত্র [Gr.,=জনগণের শাসন]democracy [Gr.,=rule of the people],, শব্দটি প্রাচীন গ্রীসে উদ্ভূত একটি সরকারকে মনোনীত করার জন্য যেখানে জনগণ রাষ্ট্রের কার্যক্রম পরিচালনায় অংশ নেয়, যেমন একটি একক শ্রেণি, নির্বাচিত গোষ্ঠী বা স্বৈরাচারী দ্বারা নিয়ন্ত্রিত সরকার থেকে আলাদা।

গণতন্ত্রের সংজ্ঞাটি প্রসারিত করা হয়েছে, তবে, একটি জনগণের অধিকার এবং ক্ষমতার উপর জোর দেয়, সরাসরি বা প্রতিনিধিদের মাধ্যমে কাজ করে, তাদের নিজস্ব উদ্দেশ্যে তাদের প্রতিষ্ঠানগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করে এমন একটি দর্শনকে বর্ণনা করে । এই ধরনের দর্শন ব্যক্তি সমুহের সমতার উপর একটি উচ্চ মূল্য রাখে এবং স্ব-আরোপিত নয় এমন সীমাবদ্ধতা থেকে যতটা সম্ভব মানুষকে মুক্ত করবে। এটি জোর দেয় যে প্রয়োজনীয় সীমাবদ্ধতাগুলি শুধুমাত্র সংখ্যাগরিষ্ঠের সম্মতির দ্বারা আরোপ করা হবে এবং তারা সমতার নীতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

মোটামুটি প্রজাতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ও গণতন্ত্রের অর্থ বা সংজ্ঞা হল এই।

আপনি এবার মিলিয়ে দেখুন গত ৭৫ বছর ধরে চলছে ভারতের নানা রাজনীতির লোকগুলি এই সংজ্ঞাগুলির কোনটা পালন করছে?

আমরা দেখছি,

১। গরীব অধিকতর গরীব হচ্ছে, ধনী অধিকতর ধনের মালিক হচ্ছে। সমাজতন্ত্রে a transitional stage in the development of a society from capitalism to communism: characterized by the distribution of income according to work rather than need ক্যাপিটালিজম থেকে কি সাম্যবাদে আসছে? না। ৭৫ বছর নষ্ট।

২। প্রজাতন্ত্র হল এমন একটি রাষ্ট্র যেখানে সমাজের সকল অংশের all segments of society are enfranchised অধিকার রয়েছে এবং যেখানে রাষ্ট্রের ক্ষমতা সাংবিধানিকভাবে সীমিত। নাগরিকদের জন্য প্রশাসনিক ব্যবস্থা উন্মুক্ত নয়। আপনি রাস্ট্রের কোন ব্যাপারে নাক গলাতে পারবেননা। এখানে বিচারপতিও নির্বাচিত হয় তার কলেজিয়ামদের সুপারিশে অর্থাৎ জনগণের জন্য রেফারেন্ডাম referendum গণভোট নেই।

৩। গণতন্ত্র। আমাদের দেশে কোনকালে প্রয়োজনীয় সীমাবদ্ধতাগুলি শুধুমাত্র সংখ্যাগরিষ্ঠের সম্মতির দ্বারা আরোপ করা হয়েছে? তাহলে কিসের গণতন্ত্র? আমরা দেখছি মাইনরিটির ভোট ও তোষণ প্রক্রিয়া রাজনীতির অগ্রাধিকার

তাহলে ভারতের রত বড় বড় নেতা ও পন্ডিতরা কি আফিম খেয়ে আধ ঘুমে আছে? সেই তুলনায় চীনের ব্যবস্থা অনেক উন্নত ও অনুপ্রেরণার নয়কি?