Uncategorized

সিলভিয়া প্লাথ ও পুরুষ বিদ্বেষঃ মহিলাদের মনন

যারা সাহিত্যের অধ্যাপনা করেন, তারা জানেন সিলভিয়া প্লাথকে Sylvia Plath, জন্ম 27 October 1932,। সিলভিয়া প্লাথ একজন নারীবাদী কবি- এমটিই পশ্চিমী নারীবাদী কবিরা দাবি করেন। এবং তার উজ্জ্বল প্রমাণ সিলভিয়া প্লাথের ড্যাডি “Daddy” নামক কবিতাটি। ক্লিক করে কবিটাটি পড়তে পারেন।

উল্লেখ্য Daddy: 1933 BY GEOFFREY BROCK


কবিতা বা শিল্প কোনকিছুই স্রষ্টার নিজস্ব অনুভূতি বা মানসিক প্রকাশ। কোন ঘটনার থেকে উৎস নিয়ে তার শৈল্পিক প্রকাশ। সার্থকতা, দক্ষতা এসব পরে বিচার্য। তবে প্রচার ও স্রষ্টার ব্যক্তিগত সামাজিক ভূমিকা একজন খারাপ কবিকেও জনহৃদয়ে আনতে পারে আবার একজন দক্ষ স্রষ্টাকেও অন্ধকারে মুছে দিতে পারে।
আমার সন্দেহ সিলভিয়ার থেকে অনেক ভাল মহিলা কবি আছেন, এবং তারাও জনমানসে আছেন, কিন্তু তারা সিলভিয়ার মত অকারণে পুরুষ ঘৃণা করতেননা। যারা পুরুষ ঘৃণা করেননা তারা নারীবাদী তকমা পাননা। বহু মহিলা এই নারীবাদী তকমার জন্য হা পিত্যেশ করেন। কারণ এই তকমাতে একটা মই আছে। সেই মই বেয়ে উপরে উঠা যায় তাড়াতাড়ি।
পুরুষ ঘৃণার কবিতা নারীবাদীদের কাছে অস্ত্র। এটা তাদের বিশ্বাস ও প্রচারের মূল উপাদান। সিলভিয়া প্লাথের মতন কবি নয় শুধু একটা অংশ মহিলা, সবসময় তার সংগী-স্বামীকে বা তার পিতাকে অকারণেও নিজের হতাশার বা ব্যর্থতার কারণ মনে করে ও তার উপর নিজের হতাশার কোপ বা ক্রোধ মেটাতে চায়।


আপনি খবরের শিরোনামেও দেখবেন মেয়ে তার বাবাকে খুন করতে দ্বিধা করেনা।
নোয়াপাড়ার সুদীপা পাল তার বাবা, মা, সহ মোট ৪জনকে খুন করেছিল। সম্প্রতিকালে দেখছি, মোবাইল কিনে না দেওয়ার জন্য বাবার বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা।স্বেচ্ছাচারী জীবনের বাধা তাই বাবাকে খুন। এরকম সহস্র নজির আছে। কোন কারণ নেই, নিজের পিঠ বাঁচাতে অল্প বয়েসী মেয়েটিও অজানা পুরুষের নামে যৌনহেনস্থার অভিযোগ আনে। ঘটনাটি ঘটেছে বেঙ্গালুরুতে, ১৬ জুন ২০২৩। An 8-year-old girl had told her parents that the delivery agent had taken her to the terrace of the building. However, CCTV footage showed she lied. এরকম অজস্র ঘটনা আছে যার থেকে আমরা ধরে নিতে পারি মহিলাদের মাথা জন্ম থেকেই বিকৃত ও মিথ্যা প্রিয়।
আমি আশ্চর্য হয়েছি। আমার ব্যক্তিগত জীবনের দেখা অভিজ্ঞতা থেকে।

সিলভিয়া প্লাথের বাবা মারা গেছে সিলভিয়ার বয়েস যখন ৮ বছর। যতটুকু তথ্য সিলভিয়ার বাবা অটো প্লাথের Otto Plath পাওয়া যায় তাতে তিনি, একজন বিজ্ঞানী ও কলেজের অধ্যাপক ছিলেন। সাধারণের মধ্যেই মিশে থাকতেন। বন্ধুবান্ধব বেশি ছিলনা।
অটো এমিল প্লাথ Otto Emil Plath।( April 13, 1885 – November 5, 1940) ছিলেন একজন জার্মান আমেরিকান লেখক, একাডেমিক এবং জীববিজ্ঞানী। প্লাথ বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ে জীববিজ্ঞান এবং জার্মান অধ্যাপক হিসাবে এবং ভ্রমর নিয়ে নির্দিষ্ট দক্ষতার সাথে একজন এনটোলজিস্ট entomologist হিসাবে কাজ করেছিলেন। যেহেতু তিনি জার্মানী (প্রুশিয়ায়) সেইহেতু তার স্বভূমির জন্য টান ছিল। কোন নাজী গ্যাস চেম্বারের ঘটনা তখনও দেখা যায়নি। নাৎসীরা গ্যাস চেম্বার ব্যবহার শুরু করে যখন রাশিয়া ১৯৪১ সালে জার্মানী আগ্রাসন শুরু করে।
১৯৪০ সালে, প্লাথ তার পায়ে সংক্রমণের কারণে একজন ডাক্তারকে দেখেছিলেন। ডাক্তার তাকে ডায়াবেটিসের উন্নত কেস হিসাবে চিহ্নিত করেন। তার পা সংক্রমণ গ্যাংগ্রিন হিসাবে চিহ্নিত হওয়ার পরে অক্টোবরে তার পা কেটে ফেলতে হয়েছিল। ১৯৪০ সালের ৫ নভেম্বর ম্যাসাচুসেটস -এর উইনথ্রপতে Winthrop, Massachusetts তিনি মারা যান। (The Nazi Party, officially the National Socialist German Workers’ Party was a far-right political party in Germany active between 1920 and 1945 that created. Adolf Hitler was an Austrian-born German politician who was the dictator of Germany from 1933 until his suicide in 1945) The Nazis began experimenting with poison gas for the purpose of mass murder in late 1939 with the killing of patients with mental and physical disabilities in the Euthanasia Program. Gassing also proved to be less costly.In 1942, systematic mass killing in stationary gas chambers began at Belzec, Sobibor, and Treblinka, all in German-occupied Poland।

১৯৩৩ সালে নাৎসিরা (রাজনৈতিক পার্টি) ক্ষমতায় আসার পরে তারা আইনের অধীনে সমস্ত ইহুদিদের সম্পত্তি, স্বাধীনতা এবং অধিকার ছিনিয়ে নিতে শুরু করে। ১৯৩৯ সালে জার্মান আক্রমণ ও পোল্যান্ডের দখলের পরে নাৎসিরা তৃতীয় রাইক থেকে পোল্যান্ডের কিছু অংশে ইহুদিদের নির্বাসন দেওয়া শুরু করে, যেখানে তারা তাদের বাকী জনসংখ্যার থেকে আলাদা করার জন্যইহুদীপাড়া বা বস্তি তৈরি করেছিল।

১৯৪১ সালে, রাশিয়ার the USSR জার্মান আগ্রাসনের সময় নাৎসিরা আন্তরিকভাবে তাদের নির্মূলের প্রচার শুরু করে। নাৎসিরা জার্মানি এবং ইহুদি জনগণের , পাশাপাশি স্লাভিক জনসংখ্যা এবং রোমার মধ্যে মধ্যে জাতিগত/বংশ যুদ্ধশুরু করে। ১৯৪১ সালের শেষের দিকে, তারা ৫০০,০০০ লোককে হত্যা করেছিল এবং ১৯৪৫ সালের মধ্যে তারা প্রায় কুড়ি লক্ষ হত্যা করেছিল – যাদের মধ্যে ১৩ লক্ষ ইহুদি ছিল। এই সম্পূর্ণ কাজটাই সারা পৃথিবীতে নাৎসীদের ঘৃণার চোখে দেখেছে।
ড্যাডি কবিতাটি সিলভিয়া লিখেছেন টেড হিউজের সাথে বিবাহ বিচ্ছেদ হবার এক মাস পরে, ১২ অক্টোবর ১৯৬২ সালে। সেই হিসাবে তার কবিতায় স্বীকারোক্তি তিনি তখন ৩০ বছরের মহিলা।
তার কবিতার প্রথম লাইনেই তার অসন্তোষটি You do not do, you do not do/ Any more, মানে তার বাবা আর তার কাছে কেউই না/কিছুই না। তার মনে হয়েছে তার বাবা কালো জুতার মধ্যে তিনি ৩০ বছর কাটিয়েছেন খুবই খারাপ ভাবে। এমনকি তিনি হাঁচি ফেলতেও পারচ্ছেননা। black shoe/ In which I have lived like a foot/
For thirty years, poor and white,

দ্বিতীয় স্তবকে বলছেন
Daddy, I have had to kill you.
You died before I had time—— তিনি তার বাবাকে হত্যা করার আগেই তার বাবা মারা গেছেন। সেই শোকও তার কাছে অসহনীয়।
৪র্থ স্তবকে তার বাবাকে তুলনা করছেন সেই নাৎসীদের সাথে আর তিনি ডাকাউ ও আসউইটজ এর ক্যাম্পে গ্যাস চেম্বারে মৃত ইহুদী । কিন্তু সিলভিয়ার কি নাৎসীদের রাজত্ব কখনো ছিল? তাতো নয়। এরপরের দিকে তার কবিতা তার বাবাকে একজন ঘৃণিত ব্যক্তির মত এক প্রতিমূর্তী বানান।
শেষ পংক্তিটিতে লেখেন Daddy, daddy, you bastard, I’m through.
কেন এত ঘৃণা। অকারণে একজন নিরীহ মানুষকে নিয়ে? সম্ভবত মহিলা যারা নারীবাদী বলে নিজেকে ভাবেন, বা অবচেতনে ভাবেন তারা কি সমাজের কাছে শ্রদ্ধার পাত্র না তারা বলতে চান প্রতেয়ক মহিলাই পুরুষ বিদ্বেষী?

Ted Hughes and Sylvia Plath, 1959

সিলভিয়ার আত্মহত্যার প্রবণতা টেড হিউজের সাথে বিয়ের অনেক আগে থেকেই ছিল ১৯৫৩ সাল থেকেই। টেড সেটা জানতেননা
টেড হিউজ ছিলেন একজন প্রতিষ্ঠিত লেখক। সিলভিয়া গেছিলেন তার সাথে দেখা করতে। তারপর ৪ মাস প্রেম ও বিয়ে। দুজন সৃজনশীল দম্পতি, শুরুটা ভালই ছিল। সিলভিয়া তার বিয়ের আগে, ছেলে পাগল মহিলা ছিলেন। তার যৌনজীবন বহু জনের সাথে ঘটেছে। এবং এই বহুমাত্রিক যৌনজীবন আমেরিকাতে মহিলাদের ভাষায় স্বাধীনতা। ফলে অনেক নারী বাদী মহিলা সিলভিয়াকে নারীবাদী কবি হিসাবে বর্ণনা করেন ও জনপ্রিয় করার প্রচার চালান।
সাধারণ মানুষের মতন না ভেবে অনেকেই সিলভিয়ার উপর অসাধারণত্বের প্রলেপ দিয়ে দেখেছেন, যারা দেখেছেন তারা সবাই নারীবাদী মহিলা। তারা যে ভুল ভাবে সিলভিয়াকে দেখেছেন তা সিলভিয়ার মৃত্যুর পর তার জীবন ও চিঠি নিয়ে বিস্তর বিশ্লেষণ হয়েছে এবং সিলভিয়া সহ নারীবাদীরা যে ধ্বংসাত্মক তা প্রমাণ হয়ে গেছে ।

পুরুষদের মাথায় রাখতে হবে, প্রেম বলে কিছুই নেই। যেকোন সময়ে একজন মহিলা কোন পুরুষকে দানব ও অপরাধী বানিয়ে সামাজের কাছে তুলতে পারেন। যেমন টেড হিউজকে অনেক অপমান সইতে হয়েছিল।